রাতের ট্রেন
কথাটা তখনকার, যখন আমি ছিলাম কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। একবার বাড়িতে আসার সময় আমি রাতের ট্রেনে উঠেছিলাম। ট্রেনটা গভীর রাতে এসে থামল একটি ছোট্ট স্টেশনে। স্টেশনের নাম ছিল ‘রহস্যপুর’। স্টেশনটা একেবারে শুনশান, যেন কোন জনমানব নেই।
আমি আর একজন যাত্রী ছিলাম সেই ট্রেনে, নাম রিনা। আমরা একসঙ্গে প্ল্যাটফর্মে নেমে এসেছিলাম। রাত তখন প্রায় দুটো বাজে। স্টেশনটা খুবই অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল, শুধু একটা টিমটিমে আলো জ্বলছিল।
আমরা দুজনেই কৌতূহল নিয়ে প্ল্যাটফর্মে হাঁটতে লাগলাম। হঠাৎ একটা মৃদু সুরের আওয়াজ শুনতে পেলাম। আওয়াজটা স্টেশনের এক কোণে থেকে আসছিল। আমরা সাহস করে এগিয়ে গেলাম এবং দেখলাম, সেখানে একটি পুরোনো ভাঙাচোরা বেঞ্চে একজন বৃদ্ধা বসে গান গাইছিলেন। তার সুরটা খুবই করুণ আর ভীতিকর ছিল।
রিনা এগিয়ে গিয়ে বৃদ্ধাকে জিজ্ঞেস করল, "মা, আপনি এখানে কেন বসে আছেন?"
বৃদ্ধা আমাদের দিকে তাকিয়ে একটা গভীর নিশ্বাস ফেলে বললেন, "আমি এই স্টেশনেই থাকি। তোমরা কেন এসেছ এখানে?"
আমরা একটু ভয় পেয়ে বললাম, "আমরা ট্রেন থেকে নেমে ভুল করে এখানে চলে এসেছি।"
বৃদ্ধা আমাদের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বললেন, "এই স্টেশনটা অনেক দিন আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে আর কোন ট্রেন থামে না।"
আমরা বিস্মিত হলাম। "কিন্তু আমরা তো এইমাত্র ট্রেন থেকে নামলাম," বললাম আমি।
বৃদ্ধা আমাদের দিকে গভীর চোখে তাকিয়ে বললেন, "তোমরা কি জান, এখানে যে ট্রেনগুলো থামে, সেগুলো সব ভুতের ট্রেন? এই স্টেশনে যারা আসে, তারা আর ফিরে যেতে পারে না।"
আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়লাম। বৃদ্ধা তখন মৃদু হাসি দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। আমরা বুঝতে পারলাম, আমরা এক ভুতুড়ে জায়গায় এসে পড়েছি। রিনা কাঁদতে শুরু করল। আমি তাকে শান্ত করতে চেষ্টা করলাম, কিন্তু নিজেও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
আশেপাশে কোনো রাস্তা খুঁজে না পেয়ে আমরা প্ল্যাটফর্মেই বসে পড়লাম। হঠাৎ করে আবার সেই মৃদু সুরের আওয়াজ শোনা গেল। এবার দেখলাম, ট্রেনের আলো আবার প্ল্যাটফর্মে আসছে। আমরা দৌড়ে ট্রেনে উঠে বসলাম। ট্রেনটা আমাদেরকে আবারও যেখানে থেকে উঠেছিলাম সেই জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে গেল।
সকালে যখন আমরা সেই স্টেশন সম্পর্কে খোঁজ করলাম, তখন জানলাম যে ‘রহস্যপুর’ স্টেশনটা আসলেই বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ২০ বছর আগে। সেই স্টেশনে যে ট্রেন থামে, তা শুধুই একটা গল্প। আমাদের মনে হল, আমরা এক ভুতুড়ে অভিজ্ঞতার মধ্যে পড়েছিলাম।
সেই দিনের পর থেকে আমরা আর কখনোই রাতের ট্রেনে উঠিনি।
আমি আর একজন যাত্রী ছিলাম সেই ট্রেনে, নাম রিনা। আমরা একসঙ্গে প্ল্যাটফর্মে নেমে এসেছিলাম। রাত তখন প্রায় দুটো বাজে। স্টেশনটা খুবই অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল, শুধু একটা টিমটিমে আলো জ্বলছিল।
আমরা দুজনেই কৌতূহল নিয়ে প্ল্যাটফর্মে হাঁটতে লাগলাম। হঠাৎ একটা মৃদু সুরের আওয়াজ শুনতে পেলাম। আওয়াজটা স্টেশনের এক কোণে থেকে আসছিল। আমরা সাহস করে এগিয়ে গেলাম এবং দেখলাম, সেখানে একটি পুরোনো ভাঙাচোরা বেঞ্চে একজন বৃদ্ধা বসে গান গাইছিলেন। তার সুরটা খুবই করুণ আর ভীতিকর ছিল।
রিনা এগিয়ে গিয়ে বৃদ্ধাকে জিজ্ঞেস করল, "মা, আপনি এখানে কেন বসে আছেন?"
বৃদ্ধা আমাদের দিকে তাকিয়ে একটা গভীর নিশ্বাস ফেলে বললেন, "আমি এই স্টেশনেই থাকি। তোমরা কেন এসেছ এখানে?"
আমরা একটু ভয় পেয়ে বললাম, "আমরা ট্রেন থেকে নেমে ভুল করে এখানে চলে এসেছি।"
বৃদ্ধা আমাদের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বললেন, "এই স্টেশনটা অনেক দিন আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে আর কোন ট্রেন থামে না।"
আমরা বিস্মিত হলাম। "কিন্তু আমরা তো এইমাত্র ট্রেন থেকে নামলাম," বললাম আমি।
বৃদ্ধা আমাদের দিকে গভীর চোখে তাকিয়ে বললেন, "তোমরা কি জান, এখানে যে ট্রেনগুলো থামে, সেগুলো সব ভুতের ট্রেন? এই স্টেশনে যারা আসে, তারা আর ফিরে যেতে পারে না।"
আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়লাম। বৃদ্ধা তখন মৃদু হাসি দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। আমরা বুঝতে পারলাম, আমরা এক ভুতুড়ে জায়গায় এসে পড়েছি। রিনা কাঁদতে শুরু করল। আমি তাকে শান্ত করতে চেষ্টা করলাম, কিন্তু নিজেও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
আশেপাশে কোনো রাস্তা খুঁজে না পেয়ে আমরা প্ল্যাটফর্মেই বসে পড়লাম। হঠাৎ করে আবার সেই মৃদু সুরের আওয়াজ শোনা গেল। এবার দেখলাম, ট্রেনের আলো আবার প্ল্যাটফর্মে আসছে। আমরা দৌড়ে ট্রেনে উঠে বসলাম। ট্রেনটা আমাদেরকে আবারও যেখানে থেকে উঠেছিলাম সেই জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে গেল।
সকালে যখন আমরা সেই স্টেশন সম্পর্কে খোঁজ করলাম, তখন জানলাম যে ‘রহস্যপুর’ স্টেশনটা আসলেই বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ২০ বছর আগে। সেই স্টেশনে যে ট্রেন থামে, তা শুধুই একটা গল্প। আমাদের মনে হল, আমরা এক ভুতুড়ে অভিজ্ঞতার মধ্যে পড়েছিলাম।
সেই দিনের পর থেকে আমরা আর কখনোই রাতের ট্রেনে উঠিনি।
Comments
Post a Comment